নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম ২০২৪

নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম ২০২৪ অনলাইনের মাধ্যমে নতুন ভোটার বা নতুন জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন করা যায়। তাও আবার ঘরে বসেই। আপনাদের মধ্যে যারা জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য হালনাগাদের সময় এলাকার বাহিরে ছিলেন। অথবা দেশের বাহিরে ছিলেন। কিংবা যেকোন কারণে হালনাগাদ করার সময় তথ্য দিতে পারেন নি। যার কারণে ভোটার হতে পারেন নি।

কিংবা যখন জাতীয় পরিচয়ত্রের হালনাগাদ চলছিল তখন আপনার বয়স ১৮ হয়নি। সম্প্রতিক সময় ১৮ বছরে পদার্পণ করেছেন। কিন্তু এখন ভোটার হতে চাচ্ছেন। কিভাবে অনলাইনের মাধ্যমে আপনি ঘরে বসে নতুন ভোটার হবেন এবং ভোটার আইডি কার্ড হাতে পাবেন। সমপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করব আজকের পোস্টে।

নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম ২০২৪

অনলাইনের মধ্যমে নতুন ভোটার আবেদন করতে প্রথমে যেকোন ব্রাউজারের এড্রেসবারে Services.nidw.gov.bd লিখে সার্চ করুন। তাহলে আপনি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের মেন ওয়েব সাইটে পৌঁছে যাবেন এখন সেখানে দুটি অপশন দেখতে পাবেন একটি হচ্ছে অ্যাকাউন্ট নেই রেজিস্ট্রেশন করুন এবং অন্যটি হল নতুন নিবন্ধনের জন্য আবেদন করুন। আপনি নতুন নিবন্ধনের জন্য আবেদন করুন এই অপশনে ক্লিক করুন।

তাহলে আপনাকে একাউন্ট নিবন্ধন ফর্মে নিয়ে আসবে। এখন ফর্মটি আপনার সার্টিফিকেট কিংবা জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী পূরণ করুন। যেমন:

  • আপনার পুরো নাম ইংরেজিতে
  • জন্ম তারিখ, মাস ও সাল
  • ছবিতে প্রদর্শিত ক্যাপচা পূরণ

উপরোক্ত তিনটি তথ্য প্রবেশের পর “বহাল” বাটনে ক্লিক করুন। এবার আপনাকে আপনার মোবাইল নম্বর দিতে বলবে। আপনি আপনার একটি সচল মোবাইল নম্বর দিয়ে দিন এবং “বার্ত পাঠান” অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার সিমে একটি OTP কোড যাবে সেটি সঠিকভাবে বসিয়ে “বহাল” বাটনে ক্লিক করুন।

আরোও পড়ুন: কিভাবে হারানো ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করবেন

এ পর্যায়ে আপনাকে অ্যাকাউন্ট নিবন্ধন ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড সেট করতে হবে। যাতে করে আপনি পরবর্তীতে আপনার এনআইডি কার্ডের একাউন্টে লগইন করতে পারেন। ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড বসিয়ে “বহাল” বাটনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার অ্যাকাউন্ট নিবন্ধন হয়ে যাবে এখন “বিস্তারিত প্রোফাইল” বাটনে ক্লিক করুন।

এ পর্যায়ে আপনাকে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য অন্যান্য তথ্য এবং ঠিকানা সাবমিট করতে হবে। শুরুতেই ব্যক্তিগত তথ্য দেওয়ার জন্য “উপরে এডিট” বাটনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার ডকুমেন্ট এডিট বাটন enable হয়ে যাবে। ব্যক্তিগত তথ্যের মধ্যে যেসব তথ্য বা ডকুমেন্টে দিতে হবে তাহলো:

নিজ তথ্য:

  • আপনার নাম (বাংলা)
  • লিঙ্গ
  • রক্তের গ্রুপ
  • জন্ম নিবন্ধন নম্বর
  • জন্ম তারিখ
  • জন্ম স্থান

পিতার তথ্যঃ

  • পিতা মৃত বা জীবিত (টিক মার্ক দিন)
  • পিতার নাম বাংলা এবং ইংরেজি
  • পিতার NID কার্ড নম্বর (Optional)
  • মৃত্যুর সন (পিতা মৃত হলে

মাতার তথ্যঃ

  • মাতা মৃত বা জীবিত (টিক মার্ক দিন)
  • মাতার নাম বাংলা এবং ইংরেজি
  • মাতার NID কার্ড নম্বর (Optional)
  • মৃত্যুর সন (মাতা মৃত হলে)

স্বামীর তথ্যঃ

  • স্বামী মৃত বা জীবিত (টিক মার্ক দিন)
  • স্বামীর নাম বাংলা এবং ইংরেজি
  • স্বামীর NID কার্ড নম্বর (Optional)
  • মৃত্যুর সন (স্বামী মৃত হলে)

সবগুলো তথ্য জন্ম নিবন্ধন বা অন্যান্য সোর্স থেকে সংগ্রহ করে সঠিকভাবে বসিয়ে উপর থেকে “পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার সামনে অন্যান্য তথ্যের ফর্ম চলে আসবে। এখন অন্যান্য তথ্যের মধ্যে যেসব তথ্য দিতে হবে তাহলো:

  • শিক্ষাগত যোগ্যতা
  • পেশা
  • অসমর্থতা (যদি থাকে)
  • শনাক্ত করণ চিহ্ন বাংলায় (জন্ম দাগ, এক্সিডেন্ট দাগ বা এমন দাগ যা কখনও ওঠানো সম্ভব না)
  • টিন নম্বর (Optional)
  • ড্রাইভিং লাইসেন্স নম্বর (Optional)
  • পাসপোর্ট নম্বর (Optional) ও
  • ধর্ম

সবগুলো তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করার পর আবারো “পরবর্তী” বাটনে ক্লিক করুন। এ পর্যায়ে আপনার বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা নির্বাচন করতে হবে। বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানার মধ্যে যেসব তথ্য দিতে হবে তাহলো:

  • অবস্থানরত দেশের নাম
  • বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানার ঘরে টিক মার্ক দিন (অর্থাৎ আপনি কোন ঠিকানায় ভোটার হতে চান সেটি নির্বাচন করুন)
  • বিভাগ
  • জেলা
  • ইউনিয়
  • থানা
  • গ্রাম/মৌজা
  • পোস্টাল কোড ইত্যাদি

সবগুলো তথ্য জন্ম নিবন্ধন বা জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী সঠিকভাবে পূরণ করে আবারও “পরবর্তী” বাটনে ক্লিক করুন। এ পর্যায়ে আপনাকে কাগজপত্র বা নথি সাবমিট করতে হবে। তবে আপনি যেহেতু নতুন ভোটার হচ্ছে সেক্ষেত্রে আপনাকে কোন ধরনের কাগজপত্র বা নথি সাবমিট করতে হবে না। তাই এই ধাপ স্কিপ করে “পরবর্তী বাটনে” ক্লিক করুন।

পরবর্তী বাটনে ক্লিক করার সাথে সাথে আপনাকে নিশ্চিত করুন পেইজে নিয়ে আসা হবে। এখন আপনার আবেদনটি নিশ্চিত করার পূর্বে আরও একবার সকল তথ্য যাচাই বাছাই করে নেন। সবকিছু যাচাই করার পর “সাবমিট” বাটনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার আবেদনটি সম্পন্ন হবে। এবং আপনার একটি অ্যাপ্লিকেশন পেনন্ডিং রয়েছে এই মেসেজটি দেখতে পাবেন।এখন ওপরের ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে ফর্মটি ডাউনলোড করে নিন। ফর্মটি ওপেন করলে সেখানে আপনার দেওয়া সবগুলো তথ্য দেখতে পাবেন। এখন সবগুলো তথ্য আরোও একবার মিলিয়ে নিন। যদি সব তথ্য ঠিক আসে তাহলে এবার ৩২ নম্বর কলামে বাদ পড়ার কারণ উল্লেখ্য করুন। অর্থাৎ আপনি দেশের বাহিরে বা এলাকার বাহিয়ে ছিলেন সেটি লিখে দিন। এবং ৩৩ নম্বর কলামের নিচে আপনার স্বাক্ষার দিন এবং ৩৪ নম্বর কালামে এলাকার প্রতিনিধির (মেম্বার/চেয়ারম্যানের) NID নম্বর, স্বাক্ষর ও সিল দিয়ে ফর্মটি নির্বাচন কমিশন অফিসে জমা করুন।

নির্বাচন কমিশন অফিসে ফর্ম জমা দেওয়ার পূর্বে অব্যশই ফর্মের সাথে আপনার কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট জমা করতে ভুলবেন না। আর তাহলো:

  • জন্ম নিবন্ধন সনদ
  • ব্লাডগ্রুপ টেস্ট কপি
  • স্কুল সার্টিফিকেট (শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলে)
  • হোল্ডিং ট্যাক্স বা বাড়ি ভাড়া পরিশোধের রসিদ
  • পিতা-মাতার NID কার্ড
  • নগরিক সনদ
  • কাবিননামা (বিবাহিত হলে)

সবগুলো ডকুমেন্ট নির্বাচন কমিশন জমা করার পর তারা আপনাকে নির্দিষ্টি একটি ডেট দিয়ে দিবে। সেই ডেটে আপনার ছবি এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়া হবে। ছবি নেওয়া হয়ে গেলে ১০ থেকে ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বরটি SMS এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর হাতে পাওয়ার পর। সেটি দিয়ে নতুন করে একাউন্ট করে। আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র টি ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।

আশা করি আপনেরা বুঝতে পেরেছেন কিভাবে নতুন ভোটার আইডি কার্ড তৈরি করতে অনলাইনে আবেদন করতে হয়। এরকম জন্ম নিবন্ধন, NID, পাসপোর্ট সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট পেতে চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *