নতুন পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন 2023

বিদেশ ভ্রমণ, স্কলারশিপ, ব্যবসা-বাণিজ্য, কারেন্সি লেনদেন, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন অথবা বিদেশে চাকরি নিতে পাসপোর্ট গুরুত্বপূর্ণ একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। প্রাপ্তবয়স্ক অথবা অপ্রাপ্তবয়স্ক যে কেউ অনলাইনে পাসপোর্ট (ই পাসপোর্ট) করতে পারবেন। তবে যাদের বয়স ২০ বছরের ঊর্ধ্বে তাদের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট তৈরি করতে অবশ্যই এনআইডি বা জাতীয় পরিচয় পত্র প্রদর্শন করতে হবে। আজকের পোস্টে আমরা দেখব কিভাবে হাতে থাকা স্মার্টফোন, কম্পিউটার বা ল্যাপটপ দিয়ে অনলাইনে পাসপোর্টের আবেদন করা যায়। 

অনলাইনে পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করার পদ্ধতি

অনলাইন পাসপোর্টন বা ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে যেকোনো ব্রাউজার থেকে চলে আসুন এই ঠিকানায় https://www.epassport. gov.bd/onboarding সেখানে আপনি এরকম একটি পেইজ দেখতে পাবেন।

এখন পেইজের মেনুবার থেকে APPLY ONLINE অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার সামনে পাসপোর্ট আবেদনের ট্যাবটি ওপেন হয়ে যাবে। 

১ম ধাপ: আপনার দেশ, জেলা ও থানা বেছে নিন। তাহলে আপনি নিচে আপনার নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিস এড্রেস দেখতে পাবেন এবং এর নিচে Continue বাটনে ক্লিক করুন।

২য় ধাপ: আপনার একটি ইমেইল এড্রেস দিয়ে একাউন্ট করতে হবে। Email এড্রেস দিয়ে I’m not robot ক্যাপসাটি পূরণ করে continue বাটনে ক্লিক করুন।

৩য় ধাপ: আপনার একাউন্ট ইনফরমেশন সাবমিট করতে হবে যেমন: জিমেইল, পাসওয়ার্ড, রিপিট পাসওয়ার্ড, ফুল নেম, গিভেন নেম, সার নেম, ফোন অপারেটর ও ফোন নম্বর দিতে হবে। তবে Given name ও Surname দেওয়ার ক্ষেত্রে নামের প্রথম অংশ অর্থাৎ (MD) দিবেন Given name এর ঘরে এবং নামের ২য় অংশ অর্থাৎ Surname এ দিবেন আপনার অর্জিনাল নাম অর্থাৎ (Korim)  সব গুলো তথ্য দেওয়ার পর আবারও I’m human ক্যাপসা পূরণ করে Create account অপশনে ক্লিক করুন। 

৪র্থ ধাপ: এই ধাপে একাউন্ট একটিভ করতে হবে। একাউন্টি একটিভ করার জন্য প্রদত্ত মেইল ইনবক্সটি চেক করুন। সেখানে E-passport কর্তৃক একটি মেইল যাবে। মেইলটি ওপেন করে লিংকে ক্লিক করলে আপনার মেইলটি Active হয়ে যাবে। তারপর সাইটে ফিরে এসে লগিং বাটনে ক্লিক করে আপনার জিমেইল ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগিং করে নিন। 

তারপর আপনার সামনে Apply for a new E-passport অপশন শো করবে। সেখানে ক্লিক দিলে আপনাকে আরোও কতগুলো ধাপ সফলভাবে অতিক্রম করতে হবে।

পাসপোর্টের ধরন 

শুরুতে পাসপোর্ট টাইপ দেখতে পাবেন। পাসপোর্ট টাইপ Ordinary সিলেক্ট করে save and continue অপশনে ক্লিক করুন। এরপর আপনার সামনে পরবর্তী ধাপ আসবে যেখানে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য দিতে হবে। 

ব্যক্তিগত তথ্য

I apply for myself বক্সে টিকমার্ক দিয়ে দিন। তারপর লিঙ্গ সিলেক্ট করুন। এরপর পেশা নির্বাচন করুন। পেশা নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটা Valid পেশি সিলেক্ট করুন যাতে করে সেই পেশার ওপরে কাগজপত্র দেখাতে পারেন। স্টুডেন্ট হলে স্টুডেন্ট সিলেক্ট করবেন। তবে Other অপশন সিলেক্ট করা যাবে না। এতে করে পরবর্তীতে সমস্যার সম্মুখীন হবেন। 

ওয়েবসাইটের পেশা লিস্টের সাথে যদি আপনার পেশা ক্যাটাগোরি মিল না করে তাহলে একটি Valid পেশা নির্বাচন করুন যেটার ওপরে কাগজ পত্র দেখাতে পারবেন। আর যদি বেকার হোন তাহলে Unemployed সিলেক্ট করুন। তবে যতটা সম্ভব একটি পেশা নির্বাচন করার চেষ্টা করুন।

এরপর আপনার ধর্ম, মোবাইল নম্বর, জন্ম নিবন্ধন নম্বর ও সিটিজেনশিপ সিলেক্ট করুন। তবে জন্ম নিবন্ধন তথ্য দেওয়ার সময় আপনার NID অনুসারে তথ্য গুলো দিবেন। আর যাদের পূর্বে MRP পাসপোর্ট রয়েছে তারা সেই পাসপোর্ট অনুসারে জন্ম তারিখ দিবেন। অন্যদিকে যারা স্টুডেন্ট তাদের সার্টিফিকেট ও NID তথ্য একই থাকতে হবে। অন্যথায় পাসপোর্ট তৈরিতে বাধা সৃষ্টি হতে পারে। সবগুলো তথ্য সঠিকভাবে বসানোর পর Save and continue তে ক্লিক করুন। 

বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা

এপর্যায়ে আপনার বর্তমান ও স্থায়ী এড্রেস তথ্য দিতে হবে যেমন: আপনার বিভাগ, জেলা, থানা, পোস্ট অফিস, গ্রাম বা মৌজা ইত্যাদি সঠিকভাবে সিলেক্ট করতে হবে। তারপর আবারও Save and continue বাটনে ক্লিক করুন।

আইডি ডকুমেন্ট

আপনাদের সামনে ৩টি অপশন শো করবে। আপনার যদি পূর্বে MRP পাসপোর্ট থাকে তাহলে ১ম অপশন সিলেক্ট করুন। এবং যাদের পূর্বের ই-পাসপোর্ট আছে তারা ২য় নম্বর অপশন সিলেক্ট করবেন। এবং যাদের পূর্বের কোন পাসপোর্ট নেই। নতুন পাসপোর্ট করতে চাচ্ছেন তারা ৩ নম্বর অপশনটি সিলেক্ট করবেন। তবে পাসপোর্ট থাকলে পূর্বের পাসপোর্টের তথ্য গুলো দিতে হবে।  তারপর আপনার অন্যকোন দেশের পাসপোর্ট থাকলে Yes দিবেন এবং না থাকলে No দিবেন।  এরপর আপনার NID নম্বর টি দিতে হবে। আর যাদের বয়স ২০ বছরের কম তারা ID number এর স্থলে জন্ম নিবন্ধন নম্বর দিবেন এবং সর্বশেষ save and continue বাটনে ক্লিক করুন।

পিতা-মাতার তথ্য

পিতা-মাতার NID তথ্য অনুসারে তাদের নাম গুলো সঠিকভাবে সাবমিট করুন। পিতা-মাতার NID নম্বর অপশনাল হলেও সেটি দিয়ে দিবেন। অন্যথায় পরবর্তীতে সমস্যা হতে পারে। তাই পিতা-মাতার NID নম্বর দিতে ভুলবেন না। আর যাদের পিতা-মাতা নেই তারা গার্ডিয়ান হিসেবে বড় ভাই বা বোনের তথ্য দিতে পারবেন গার্ডিয়ান ঘরে। আর গার্ডিয়া  থাকলে তাদের তথ্য দিয়ে Guardian কলামে Guardian not applicable সিলেক্ট করে নিচে থেকে Save and continue বাটনে ক্লিক করুন।

বৈবাহিক অবস্থা

এই ধাপে আপনার বৈবাহিক অবস্থা সিলেক্ট করতে হবে। আপনি বিবাহিত হলে Married সিলেক্ট করে কোন তথ্য প্রয়োজন হলে সেটি দিয়ে দিন। আর অবিবাহিত হলে Unmarried দিয়ে save and continue তে ক্লিক করুন।

Emergency contact

Emergency contact হিসেবে আপনি যেকাউকে সিলেক্ট করতে পারবেন। অর্থাৎ আপনার অনুপস্থিতে বা আপনাকে পাসপোর্ট অফিস থেকে যোগাযোগ করে না পেলে তারা Emergency contact ব্যক্তির সাথে আপনার তথ্য শিয়ার করবে। এছাড়াও ইর্মাজেন্সি কনটাক্ট পাসপোর্ট প্রথম পাতায় উল্ল্যেখ থাকবে। তাই খুব পরিচিতি কাউকে সিলেক্ট করুন এবং তার অবস্থান নিশ্চিত করুন। তারপর save and continue অপশনে ক্লিক করুন।

পাসপোর্ট অপশন

আপনার সামনে পাসপোর্ট অপশন শো করবে। অর্থাৎ আপনি কত পাতার কত বছর মেয়াদি পাসপোর্ট করতে চাচ্ছেন সেটি সিলেক্ট করুন। আপনি যদি ৪৮ পাতার ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট করেন তাহলে ৪০২৫ টাকা Pay করতে হবে। আপনি যদি ৪৮ পাতার ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট আবেদন করেন তাহলে ৫৭৫০ টাকা দিতে হবে। এভাবে করে আপনি ৪৮ পাতার ও ৬৪ পাতার পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন। পাসপোর্টের খরচ গুলো সময়ের আলোকে পরিবর্তীত হতে পরে। আর পছন্দ মতো প্যাকেজ বেছে নিয়ে save and continue তে ক্লিক করুন।

Delivery options and appointment 

অর্থাৎ আপনার পাসপোর্টের ডেলিভারি টাইম। আপনি ২টি অপশন দেখতে পাবেন যেমন:

  •  Regular (১২-১৫ দিন) 
  •  Express (৭-১০ দিন)

এছাড়াও আপনি চাইলে পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করে Super express জন্য আবেদন করতে পারবেন (১-৩ দিন) তবে প্রত্যেকটার জন্য আলাদা আলাদা পেমেন্ট করা লাগবে। আপনার প্যাকেজটি বেছে নিয়ে save and continue তে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার সামনে এতক্ষণ যাবত পূরণকৃত সকল তথ্য আরো একবার পর্দশিত হবে।  সবগুলো তথ্য ভালো করে দেখে চেক করে নিন কোথাও ভুল আছে কিনা। ভুল থাকলে Edit অপশনে ক্লিক করে পরিবর্তন করে নিন। আর ভুল না থাকলে নিচে থেকে Confirm and proceed to payment এ ক্লিক করুন। 

তারপর আপনার সামনে Summary অপশন দেখাবে সেটি ডাউনলোড করে নিন। এবং তার নিচে পেমেন্ট অপশন দেখতে পাবেন। আপনি চাইলে Online payment বা Offline payment করতে পারবেন।  অনলাইন পেমেন্ট মানি অনলাইন অর্থাৎ বিকাশ, রকেট, নগদ ব্যবহার করে পেমেন্ট করা। আর অপলাইন পেমেন্টের ক্ষেত্রে ব্যাংকে গিয়ে পেমেন্ট করতে হবে। যেকোন একটি মেথড সিলেক্ট করে Continue তে ক্লিক করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *