হাতে লেখা জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন আজকের পোস্ট। আপনাদের ভিতরে অনেকেই আছেন যাদের জন্ম নিবন্ধনটি ইংরেজিত অর্থাৎ ডিজিটাল না থাকার কারণে সরকারি চাকরি। কিংবা বিভিন্ন কাজের জন্য ব্যবহার করেন। তখন আপনার জন্ম নিবন্ধনটি ইংরেজিতে অর্থাৎ ডিজিটাল না থাকার কারণে আপনার আবেদন রিজেক্ট/বাতিল করে দেয়।
তাছাড়া ও আপনি যখন পাসপোর্ট অথবা ব্যাংক একাউন্ট তৈরি করতে যাবেন। তখন আপনার জন্ম নিবন্ধনটি ডিজিটাল না থাকার কারণে আপনি একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন না। আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করব কিভাবে ঘরে বসে অনলাইনে মাধ্যমে আপনার হাতে থাকা স্মার্ট ফোনটি ব্যবহার করে হাতে লেখা জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল করতে হয়।
আলোচনার বিষয়
হাতে লেখা জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল করার নিয়ম
হাতে লেখা জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল করার জন্য সর্বপ্রথম আপনি আপনার মোবাইল কিংবা কম্পিউটারে ডাটা সংযোগ চালু করুন। তারপর মোবাইল কিংবা কম্পিউটারে থাকা যেকোনো একটি ব্রাউজার ওপেন করুন এবং সার্চ অপশনে জন্ম নিবন্ধন/birth certificate লিখে সার্চ করুন। তারপর সার্চ রেজাল্ট আসা প্রথম ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন। তাহলে আপনার সামনে একটি পেইজ ওপেন হবে।
এখন আপনি যদি মোবাইল থেকে আবেদন করেন তাহলে উপরের 3 ডট অপশন থেকে ‘জন্ম নিবন্ধন’ অপশনে ট্যাপ করে ধরুন। আর যদি কম্পিউটার থেকে আবেদন করেন তাহলে উপরে মেনু অপশনে নিম্নের অপশন গুলো দেখতে পাবেন। যেমন:
- জন্ম নিবন্ধনের আবেদনের বর্তমান অবস্থা
- জন্ম নিবন্ধন সনদ পূর্ণ: মুদ্রন
- জন্ম নিবন্ধন আবেদন
- সার্টিফিকেট বাতিল আবেদন
- জন্ম নিবন্ধনের তথ্য সংশোধন আবেদন
- জন্ম নিবন্ধন তথ্য অনুসন্ধান
- জন্ম নিবন্ধন আবেদনপত্র প্রিন্ট
এখান থেকে আপনি ‘জন্ম নিবন্ধনের তথ্য সংশোধন আবেদন’ অপশনটিতে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার সামনে একটি ফরম ওপেন হবে। সেখানে তিনটি অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:
- জন্ম নিবন্ধন নম্বর
- জন্ম তারিখ এবং
- ক্যাপচা
এখন আপনি উপরে অপশন গুলোতে আপনার জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী সঠিকভাবে পূরণ করুন এবং নিচের ছবিটি দেখে ক্যাপচাটি পূরণ করুন। তারপর ‘অনুসন্ধান’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার জন্ম নিবন্ধন কার্ডটি আপনার সামনে চলে আসবে। এখন আপনি ‘নির্বাচন করুন’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে ‘আপনি কি নিশ্চিত’ অপশন চলে আসবে। সেখান থেকে ‘কনফার্ম’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার সামনে একটি ফর্ম ওপেন হবে এবং সেখানে অনেকগুলো অপশন দেখতে পাবেন।
হাতে লেখা জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল করার নিয়ম/জন্ম স্থানের ঠিকানা
এখানে আপনি সর্বোচ্চ ৭ বার জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এখন হাতে লেখা জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল করার জন্য নিচে ‘সংশোধিত তথ্য নির্বাচন’ অপশন দেখতে পাবেন। সেখানে ক্লিক করে ‘নাম ইংরেজিতে’ সিলেক্ট করুন। তারপর চাহিত সংশোধিত তথ্য এবং সংশোধনের কারণ অপশন নির্বাচন করুন। এখন নিচের অপশনে ‘জন্ম স্থানের ঠিকানা’ অপশন দেখতে পাবেন এবং সেখানে আপনি অনেকগুলো অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:
- দেশ
- বিভাগ
- ডাকঘর (বাংলায়)
- ডাকঘর (ইংরেজিতে)
- গ্রাম/পাড়া/মহল্লা
- গ্রাম/পাড়া/মহল্লা (ইংরেজিতে)
- বাসা ও সড়ক (নাম,নম্বর) এবং
- বাসা ও সড়ক (নাম,নম্বর) (ইংরেজিতে)
আরোও পড়ুন: অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন করার নিয়ম
এখন উপরে উল্লেখিত তথ্য গুলো আপনি আপনার ‘জন্ম স্থানের ঠিকানা’ অনুযায়ী সঠিকভাবে পূরণ করুন। তারপর নিচে ‘স্থায়ী ঠিকানা’ অপশনে বেশ কিছু অপশন দেখতে পাবেন।
হাতে লেখা জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল করার নিয়ম/স্থায়ী ঠিকানা
এখন সঠিকভাবে আপনার স্থয়ী ঠিকানা গুলো নির্বাচন করুন। এক্ষেত্রে আপনি NID/সার্টিফিকেট/জন্ম নিবন্ধনের সাহায্য নিতে পারেন। স্থায়ী ঠিকানার মধ্যে যেই তথ্য গুলো দিতে হবে তাহলো:
- দেশ
- বিভাগ
- ডাকঘর (বাংলায়)
- ডাকঘর (ইংরেজিতে)
- গ্রাম/পাড়া/মহল্লা
- গ্রাম/পাড়া/মহল্লা (ইংরেজিতে)
- বাসা ও সড়ক (নাম,নম্বর) এবং
- বাসা ও সড়ক (নাম,নম্বর) (ইংরেজিতে)
আবারো ও উপরের অপশন গুলোতে আপনি আপনার ‘স্থায়ী ঠিকানা’ অনুযায়ী সঠিকভাবে পূরণ করুন। এখানে আপনার বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা যদি একই হয় তাহলে সেটি দিতে পারেন। তারপরও নিচে ‘বর্তমান ঠিকানা’ অপশন দেখতে পাবেন এবং সেখানে অনেকগুলো অপশন দেখতে হবে। যেমন:
- দেশ
- বিভাগ
- ডাকঘর (বাংলায়)
- ডাকঘর (ইংরেজিতে)
- গ্রাম/পাড়া/মহল্লা
- গ্রাম/পাড়া/মহল্লা (ইংরেজিতে)
- বাসা ও সড়ক (নাম,নম্বর) এবং
- বাসা ও সড়ক (নাম,নম্বর) (ইংরেজিতে)
এখন আপনি যদি চান তাহলে জন্ম স্থানের ঠিকানা, স্থায়ী ঠিকানা এবং বর্তমান ঠিকানা উপায় একই নির্বাচন করতে পারবেন। এখানে আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী অপশন গুলো সঠিকভাবে পূরণ করুন।
আরো পড়ুনঃ নাব্যতা কী?
হাতে লেখা জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল করতে ডকুমেন্ট সংযুক্তি করণ
নিচে সংযুক্তি (প্রতিটি ফাইলের জন্য সর্বোচ্চ ফাইল সাইজ ১০০ কিলোবাইট) অপশন দেখতে পাবেন। এখানে আপনাকে কিছু ডকুমেন্ট সংযুক্ত করতে হবে। যেগুলোর সাইজ ১০০ কিলোবাইটের ভিতরে হতে হবে।
এখানে ডকুমেন্ট আপলোড করার জন্য ‘সংযোজন’ অপশনে ক্লিক করুন এবং আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের তথ্য, পুরনো জন্ম নিবন্ধন, শিক্ষাগত সার্টিফিকেট ও অন্যান্য ডকুমেন্টগুলো আপলোড করুন। তারপরে নিচে ‘আবেদনকারী তথ্য’ অপশন দেখতে পাবেন এবং তার নিচে অনেকগুলো অপশন দেখতে পাবেন। যেমন:
- আবেদনাধীন ব্যক্তির সহিত সম্পর্ক
- আবেদনকারীর নাম
- ইমেইল
- ফোন নম্বর এবং
- ওটিপি
এখন উপরের ‘আবেদনাধীন ব্যক্তির সহিত সম্পর্ক’ অপশনে আপনি যে ব্যক্তিকে সিলেক্ট করবেন সেই ব্যক্তির তথ্য দিয়ে বাকি অপশন গুলো পূরণ করতে হবে। উদাহরণস্বর, আপনি ‘অভিভাবক’ সিলেক্ট করলেন। তাহলে আপনার নিজের তথ্য দিয়ে অপশন গুলো পূরণ করুন এবং ‘সাবমিট’ অপশনে ক্লিক করুন। আর যদি নিজে নিজের জন্য আবেদন করে থাকেন তাহলে শুধু ‘নিজ’ সিলেক্ট করুন। তাহলে আর কোন তথ্য দিতে হবে না।
এখন নিচে আপনার একটি একটিভ ফোন নম্বর দিয়ে ‘ওটিপি পাঠান’ অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার নম্বরে একটি OTP যাবে। সেটি বসিয়ে কনফর্ম করুন।
এখন সাবমিট অপশনে ক্লিক করার সাথে সাথে আপনার আবেদনটি তাদের কাছে সঠিকভাবে সাবমিট হয়ে যাবে এবং সেখানে আপনার আবেদন নম্বর ও তারিখ দেখতে পাবেন।
এখানে উল্লেখিত তারিখের মধ্যে আপনাকে নিকটস্থ কার্যালয়ে গিয়ে যোগাযোগ করতে হবে। এখন আপনি যদি এখান থেকে আবেদন পত্রটি প্রিন্ট করতে চান তাহলে ‘প্রিন্ট’ অপশনে ক্লিক করে আবেদন পত্রটি প্রিন্ট করে নিতে পারবেন। এই পদক্ষেপ ব্যবহার করে আপনি আপনার হাতে লেখা জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল করতে পারবেন এবং বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতে পারবেন।