বাংলাদেশের মধ্যে আমাদের জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি কার্ড হচ্ছে আমাদের রাষ্ট্রীয় পরিচয় । দেশের বাহিরে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের জন্য পাসপোর্ট হচ্ছে বাংলাদেশী নাগরিক হিসেবে রাষ্ট্রীয় পরিচয় । বাংলাদেশ থেকে দেশের বাহিরে ভ্রমণ করার জন্য পাসপোর্ট এর প্রয়োজন হয় । এখন ঘরে বসেই নিজের মোবাইল অথবা কম্পিউটারের মাধ্যমে নিজেই নিজের ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। কোন প্রকার দালালের সাহায্য ছাড়াই আজকে আমরা এই পোষ্টের মাধ্যমে জানবো ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করার নিয়ম, ই পাসপোর্ট করতে কি কি কাগজপত্র লাগে।
আলোচনার বিষয়
ই পাসপোর্ট করতে কি কি কাগজপত্র লাগে
- অনলাইনে আবেদনের সারসংক্ষেপ বা সামারি
- আবেদনের কপি
- ভোটার আইডি কার্ড / ইংরেজি অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ
- ইলেকট্রিক বিলের কপি
- পিতা ও মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের অরজিনাল কপি ও ফটো কপি ( শিশুদের জন্য )
- নাগরিক সনদ চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট
- পূর্ববর্তী পাসপোর্ট এবং পাসপোর্টের ফটোকপি (রিনিউয়ের জন্য)
ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করার নিয়ম
ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করার নিয়ম অনুসারে সবার প্রথম আবেদন করার জন্য www.e-passport.gov.bd ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে হবে এবং এপ্লাই অনলাইন বাটনে ক্লিক করে কিছু ধাপ অনুসরণ করে ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে হবে সবার প্রথমে আঞ্চলিক অফিস বা থানা নির্বাচন করতে হবে। সম্পূর্ণ করতে হবে ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান করতে হবে পিতা মাতার তথ্য প্রদান করতে হবে ও জরুরী কাগজপত্র তথ্য প্রদান করতে হবে এবং শেষ ধাপে সবশেষে পাসপোর্টের ধরণ ও ডেলিভারী সিলেক্ট করে আবেদনটি সাবমিট করুন এবং প্রিন্ট কপি সংগ্রহ করুন। ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত দেওয়া আছে ।
আরো পড়ুনঃ নতুন পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে
আঞ্চলিক অফিস ও থানা নির্বাচন করুন
https://www.epassport.gov.bd/applications ওয়েবসাইটে ভিজিট করার পর এই ধরনের একটি পেজ দেখতে পারবেন
এখান থেকে Directly to online Application অপশনে ক্লিক করুন। তারপর নিচের ইমেজের মতো পেইজ চলে আসবে। এখানে আপনার জেলা ও পুলিশ থানার নাম নির্বাচন করুন।
কন্টিনিউ বাটনে কি ক্লিক করার পর আপনাকে আপনার ইমেইল এড্রেসটি ভেরিফিকেশন করতে হবে। আপনি যে জিমেইলটি ব্যবহার করবেন অবশ্যই সেই জিমেইল অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড মনে রাখতে হবে । আর যদি জিমেইলের পাসওয়ার্ডটি মনে না থাকলে তাহলে জিমেইলের পাসওয়ার্ডটি ফরগেট করে নিবেন । জিমেইল একাউন্টে ব্যবহার করে I am not a robot টিক দিয়ে Continue বাটন ক্লিক করুন।
ইমেইল ভেরিফিকেশন করুন
এরপর আপনার দেওয়া জিমেইল একাউন্টটিতে পাসপোর্ট ওয়েবসাইট থেকে একটি ভেরিফিকেশন মেইল পাঠানো হবে। এবং ভেরিফিকেশন মেল এর মধ্যে একটি লিঙ্ক থাকবে উক্ত লিংকে এ ক্লিক করে ইমেইল ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করতে হবে।
ব্যক্তিগত তথ্য পূরণ করুন
ইমেল ভেরিফিকেশন সম্পূর্ণ হওয়ার পর পুনরায় আগের ওয়েবসাইটে লগইন করুন তারপর অ্যাপ্লাই ফর নিউ পাসপোর্ট বাট অনেক ক্লিক করে assport Type হিসেবে সাধারণ পাসপোর্ট হলে Ordinary ও সরকারি আদেশে বা NOC এর মাধ্যমে পাসপোর্ট Official সিলেক্ট করুন।

এখানে আপনার ব্যক্তিগত সঠিক তথ্য ইংরেজিতে সঠিকভাবে প্রদান করুন
ইমেল ভেরিফিকেশন এর পর পুনরায় পাসপোর্ট এর ওয়েবসাইটটা লগইন করুন তারপর আপনার ব্যক্তিগত তথ্যগুলো সংযোজন করুন যেমন আপনার নাম জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার ইত্যাদি তথ্য প্রদান করে সেভ এন্ড কন্টিনিউ বাটনে ক্লিক করুন।
ID documents
এই ধাপে আপনার কাছে জানতে চাওয়া হবে যে আপনার আগের কোন পাসপোর্ট ছিল কিনা। যদি আপনার আগের কোন MRP PASSPORT থাকে তাহলে Yse, I have a Machine Readable passport ( MRP ) এটি নির্বাচন করবেন। আর যদি আপনার E Passport থেকে থাকে তাহলে Yes, I have an Electronic Passport ( ePP ) নির্বাচন করবেন। আর যদি আপনার কোন প্রকার পাসপোর্ট না থাকে তাহলে “No, I don’t have any previous passport” নির্বাচন করবেন । যাদের অনেক দিন আগের হাতের লিখা পাসপোর্ট আছে তারাও এটি নির্বাচন করবেন।
সর্বশেষ ব্যক্তি জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার ইনপুট করতে হবে। ২০ বছরের নিচে যাদের জাতীয় পরিচয় পত্র নেই তারা তাদের জন্ম নিবন্ধন নাম্বারটি ব্যবহার করবে।
ঠিকানা প্রদান এবং বাকি অংশের কাজ ও ই পাসপোর্টে ফি প্রদান
পরবর্তী পর্যায়ে আপনার ঠিকানা ভোটার আইডি কার্ড অনুযায়ী বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা প্রদান করুন। এবং জরুরী প্রয়োজনের ক্ষেত্রে বাবা-মা ভাই বোনের ফোন নাম্বার সংযুক্ত করুন। তারপর পরবর্তী ধাপে এ পাসপোর্ট এর পৃষ্ঠা এবং মেয়াদ সিলেকশন করুন। শেষ ধাপে Passport Delivery সাধারণ না জরুরী তা সিলেক্ট করুন। জরুরী হলে Express ও সাধারণ হলে Ordinary সিলেক্ট করুন। সবশেষে উপরে প্রদানকৃত সকল তথ্যগুলো পুনরায় যাচাই বাচাই করে আবেদনটি জমা দিতে Submit বাটনে ক্লিক করুন তারপর আবেদন ২টি PDF ডাউনলোড করতে হবে। 1) Application Summery, 2) Online Registration Form. এগুলো কম্পিউটার থেকে ভালভাবে প্রিন্ট করে নিবেন এই দুইটি ডকুমেন্ট এবং ভোটার আইডি কার্ড সহ ব্যাংকে ই পাসপোর্টে টাকা পরিশোধ করতে হবে । ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করার নিয়ম সর্বশেষ কাজটি হলো ই পাসপোর্টে টাকা পরিশোধ করা অনলাইন পেমেন্ট এর মাধ্যমে করতে পারবেন বা অফলাইনে ব্যাংকের মাধ্যমেও করতে পারবেন ।
ই পাসপোর্ট ফি কত টাকা ?
৪০২৫ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১৩৮০০ টাকা পর্যন্ত ই পাসপোর্ট ফি হয়ে থাকে । পাসপোর্টের মেয়াদ এবং পৃষ্ঠা সংখ্যা ও ডেলিভারির অনুসারে ই পাসপোর্ট এর ফি বিভিন্ন হয়ে থাকে ।
পৃষ্ঠা | মেয়াদ | ডেলিভারির সময় | ই পাসপোর্ট ফি |
48 পৃষ্ঠা | 5 বছর | 21 দিন | 4,025 টাকা |
48 পৃষ্ঠা | 5 বছর | 10 দিন | 6,325 টাকা |
48 পৃষ্ঠা | 5 বছর | ২ দিন | 8,625 টাকা |
48 পৃষ্ঠা | ১০ বছর | 21 দিন | 5,750 টাকা |
48 পৃষ্ঠা | ১০ বছর | 10 দিন | 8,050 টাকা |
48 পৃষ্ঠা | ১০ বছর | ২ দিন | 10,350 টাকা |
64 পৃষ্ঠা | 5 বছর | 21 দিন | 6,325 টাকা |
64 পৃষ্ঠা | 5 বছর | 10 দিন | 8,625 টাকা |
64 পৃষ্ঠা | 5 বছর | ২ দিন | 12,075 টাকা |
64 পৃষ্ঠা | ১০ বছর | 21 দিন | 8,050 টাকা |
64 পৃষ্ঠা | ১০ বছর | 10 দিন | 10,350 টাকা |
64 পৃষ্ঠা | ১০ বছর | ২ দিন | 13,800 টাকা |