আমাদের জীবনে ড্রাইভিং লাইসেন্সের গুরুত্ব অপরিসীম। এটি শুধুমাত্র একটি পরিচয়পত্র বা যানবাহন চালানোর অনুমতিপত্রই নয়, বরং এটি নিয়ম মেনে স্বাধীন ভাবে গাড়ি চালানোর অনুমদন যেটি পেতে হলে সবার আগে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদ করতে হবে । ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকার মানে হল আপনি আপনার নিজের ইচ্ছামত যেকোনো জায়গায় যেকোনো সময় যেতে পারবেন। এই পোস্টের মাধ্যমে লাইসেন্সের জন্য আবেদনের প্রক্রিয়া সর্ম্পকে জানতে পারবেন ।
আলোচনার বিষয়
ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদনের প্রক্রিয়া
ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করার জন্য আপনাকে নিম্নলিখিত যোগ্যতা পূরণ করতে হবে:
- বয়স: অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর এবং পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য ন্যূনতম বয়স ২১ বছর।
- শিক্ষাগত যোগ্যতা: ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা ৮ম শ্রেণী পাশ।
- শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা: আবেদনকারীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ হতে হবে।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
- জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) / পাসপোর্ট
- আবেদন ফরম (পূরণকৃত)
- ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র (সর্বনিম্ন ৮ম শ্রেণী)
- মেডিকেল সার্টিফিকেট (নির্ধারিত ডাক্তারের স্বাক্ষরসহ)
- আবেদন ফি
আবেদন প্রক্রিয়া:
১. অনলাইনে আবেদন:
- বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ওয়েবসাইটে যান (http://www.brta.gov.bd/)।
- “অনলাইন সেবা” মেনু থেকে “ড্রাইভিং লাইসেন্স” অপশনটি নির্বাচন করুন।
- “নতুন আবেদন” ক্লিক করুন এবং নির্দেশাবলী অনুসরণ করুন।
- প্রয়োজনীয় তথ্য ও কাগজপত্র আপলোড করুন।
- আবেদন ফি প্রদান করুন।
- আবেদন জমা দিন।
২. অফলাইনে আবেদন:
- নিকটতম বিআরটিএ অফিসে যান।
- নির্ধারিত আবেদন ফরম সংগ্রহ করুন।
- ফরমটি পূরণ করুন এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করুন।
- আবেদন ফি প্রদান করুন।
- আবেদন জমা দিন।
আবেদন ফি:
অপেশাদার লাইসেন্স:
- 1 ক্যাটাগরি (শুধুমাত্র মোটরসাইকেল): ৫১৮/- টাকা
- 2 ক্যাটাগরি (মোটরসাইকেল ও গাড়ি): ৭৪৮/- টাকা
পেশাদার লাইসেন্স:
- 3 ক্যাটাগরি (মোটরসাইকেল, গাড়ি, ও হালকা যানবাহন): ৮৯৮/- টাকা
- 4 ক্যাটাগরি (মোটরসাইকেল, গাড়ি, হালকা যানবাহন, ও ভারী যানবাহন): ১,০৪৮/- টাকা
পরীক্ষা:
আবেদন গ্রহণের পর, আপনাকে দুটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে:
- লিখিত পরীক্ষা: এই পরীক্ষায় যানবাহন চালানোর নিয়ম কানুন সম্পর্কে প্রশ্ন থাকবে।
- ড্রাইভিং পরীক্ষা: এই পরীক্ষায় আপনাকে প্রশিক্ষকের উপস্থিতিতে যানবাহন চালানোর দক্ষতা প্রদর্শন করতে হবে।
লাইসেন্স গ্রহণ:
- পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে আপনি ড্রাইভিং লাইসেন্স পাবেন।
- লাইসেন্স ডাকযোগে আপনার ঠিকানায় পাঠানো হবে।
আরো পড়ুনঃ ভোটার আইডি কার্ড চেক ২০২৪
ড্রাইভিং লাইসেন্সের ধরণ
বাংলাদেশে মূলত দুই ধরণের ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করা হয়:
- অপেশাদার লাইসেন্স:
যারা ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য যানবাহন চালান তাদের জন্য এই লাইসেন্স প্রযোজ্য। অপেশাদার লাইসেন্সধারী যানবাহন চালিয়ে ভাড়া বা বেতন নিতে পারবেন না।
- পেশাদার লাইসেন্স:
যারা যানবাহন চালিয়ে ভাড়া বা বেতন আয় করতে চান তাদের জন্য এই লাইসেন্স প্রযোজ্য। পেশাদার লাইসেন্সধারী বিভিন্ন ধরণের যানবাহন, যেমন বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, অটোরিকশা ইত্যাদি চালাতে পারবেন।
ড্রাইভিং লাইসেন্স কেবল একটি আইনি অনুমোদনই নয়, বরং এটি আমাদের দায়িত্ববোধেরও প্রতীক। যানবাহন চালানোর সময় আমাদের সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে এবং ট্রাফিক আইন মেনে চলতে হবে।
FAQ
ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে কত দিন সময় লাগে?
উত্তর: সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে ড্রাইভিং লাইসেন্স ডাকযোগে ৭-১৫ দিনের মধ্যে আবেদনকারীর ঠিকানায় পাঠানো হয়।
ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ কত দিন ?
- মোটরসাইকেল (সর্বোচ্চ 80cc): 5 বছর
- মোটরসাইকেল (81cc – 150cc): 5 বছর
- মোটরসাইকেল (151cc – 350cc): 5 বছর
- গাড়ি (পরিবহন ব্যবহারের জন্য নয়): 10 বছর
- গাড়ি (পরিবহন ব্যবহারের জন্য): 5 বছর
ড্রাইভিং লাইসেন্স কি?
উত্তর: ড্রাইভিং লাইসেন্স হলো সরকার কর্তৃক জারি করা একটি বৈধ দলিল যা একজন ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট শ্রেণীর যানবাহন চালানোর অনুমতি দেয়।
লার্নার লাইসেন্সের পরীক্ষায় কত নম্বর পেলে উত্তীর্ণ হওয়া যায়?
- লিখিত পরীক্ষায় ৫০% নম্বর পেলে উত্তীর্ণ হওয়া যাবে।
- মৌখিক পরীক্ষায় ৬০% নম্বর পেলে উত্তীর্ণ হওয়া যাবে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স হারিয়ে গেলে করনিয় কি ?
সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে হবে ।